Saturday, September 5, 2020

শিক্ষক দিবস

শিক্ষক দিবস

Teacher's Day


আজকে শিক্ষক দিবস। আজকেই আমাদের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণানের জন্মদিন। রাষ্ট্রপতি হলেও তিনি একজন শিক্ষক ছিলেন।


আজকের দিনটিকে শিক্ষক দিবস হিসেবে আমরা পালন করি।

একজন শিক্ষক হলেন  friend, philosopher এবং guide ।

আমি আমার ছোট্ট 15 বছরের শিক্ষকতার জীবনে দেখেছি যে সমস্ত ছাত্ররা ছাত্রীরা শিক্ষকদের সম্মান এবং তাদের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়েছে তারা জীবনে বহুদূর এগিয়ে গিয়েছে। এই ধারণা হয়তো আমার ভুলও হতে পারে। কিন্তু আমার বাস্তব সমীক্ষায় এটাই কঠিন ভবিতব্য।

এখানে শিক্ষক বলতে শুধুমাত্র কিন্তু তোমার স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা নন। এর সঙ্গে রয়েছেন

তোমার বাবা-মা তোমার পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন গুরুজন, তোমার প্রাইভেট টিউটর ,সবাই তোমার শিক্ষক। কারণ তুমি তাদেরও কাছ থেকে কিছু না কিছু শিখেছ ।

এমনকি তোমার বন্ধুও একজন শিক্ষক।

আজকে এই শিক্ষক দিবসে আমার একটা জিনিসই তোমাদের কাছে বলার সেটা হল অনেক বেশি করে বই পড়তে হবে। পড়ার বাইরে সিলেবাসের বাইরে। দৈনন্দিন বিভিন্ন ঘটনাবলী তথা পারিপার্শ্বিক পরিবেশ থেকে আমাদের শিখতে হবে।

যেমন আমরা পিঁপড়েদের বিভিন্ন কার্যকলাপ থেকে বুঝতে পারি তারা কিভাবে একে অপরকে সাহায্য করে এবং দলগত ভাবে কাজ করে।

সবশেষে বলি এমন কিছু কাজ করো যাতে সমাজের উপকার হয় অথবা উপকার করতে না পারো কারো ক্ষতি করার চেষ্টা করো না।

আর এই করোনা আবহে তোমরা সুস্থ থাকো। এবং অবশ্যই তোমারা ভালো এবং খারাপের পার্থক্যটা বোঝার চেষ্টা করো।

সবাইকে শিক্ষক দিবসের অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল।


Tuesday, June 30, 2020

বয়কট চায়না (Boycott China)

Boycott China

সম্প্রতি ভারত সরকার দ্বারা চীনের যে 59 টি অ্যাপ এর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে তা বর্তমান পরিস্থিতিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

এই  অ্যাপ গুলি যে মানুষের প্রাত্যহিক জীবনে ভীষণ ভাবে কাজে লাগে তা নয় তবে একথা ঠিক এর মধ্যে এমন কিছু অ্যাপস রয়েছে যা বর্তমান যুব সমাজকে একটি মুবি সমাজে অধঃপতন করেছে। এক্ষেত্রে আমরা টিক টক অ্যাপ এর কথা বলতে পারি ।

এর মধ্যে কিছু অ্যাপ আছে যে অ্যাপ গুলির অনেক বিকল্প আমরা গুগল প্লে স্টোরে পেয়ে যাব যাতে আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য অনেক সুরক্ষিত থাকবে।


Thursday, June 18, 2020

Land Slide ভূমিধস

Land Slide 

যে সমস্ত প্রাকৃতিক ঘটনা মানুষ ও পরিবেশের ক্ষতি করে তাকে প্রাকৃতিক বিপর্যয় বলে। এর মধ্যে ধস অন্যতম ।এটি সূত্রপাত হয় বিভিন্ন প্রকার প্রাকৃতিক ঘটনা ও মানুষের কার্যাবলীকে কেন্দ্র করে ।সাধারণভাবে পাহাড়ের ঢাল বরাবর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানে পাথরের চাঁই, মাটি এবং অন্যান্য আলগা পদার্থের হঠাৎ নেমে আসা বা ধসে পড়ার ঘটনাকে ধস বলে । সাধারণত বর্ষাকালে পাহাড়ে ধস নামে ।তবে ভূমিকম্প হলে বা আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাতের সময়েও ধস নামতে পারে । ধস নামলে মানুষ ও পরিবেশের প্রচুর ক্ষতি হয়। তাই এটি মানুষের কাছে বিশেষ সমস্যা ।যেমন বর্ষাকালে দার্জিলিং ও তার আশেপাশের পাহাড়ি অঞ্চলে প্রায় 2000 প্রকারের ভূমিধস দেখা যায় ।

ধস  দ্রুত ও ধির এই দুই প্রক্রিয়ায় সংগঠিত হতে পারে ।তবে অনেক সময় এর জন্য বেশ খানিকটা সময়েরও দরকার হয় । তা শুধু মাত্র কয়েকটা দিন সপ্তাহ নয়, কয়েক বছর ধরেও আস্তে আস্তে ঘটতে পারে। আর যেসব জায়গায় আবহাওয়া পরিবর্তন হয় ঘনঘন সেখানেই এরকম ধসের ঘটনা চোখে পড়ে বেশি।

ধস সৃষ্টি কারণ :

সমস্ত রকম ধসের সঙ্গে প্রাকৃতিক কারণ ও মনুষ্য জনিত এই দুই কারণ খুব গভীরভাবে জড়িত ।

প্রাকৃতিক কারণ

বৃষ্টিপাত

ধস সৃস্টির প্রধান কারণ হিসেবে বৃষ্টিপাতকেই দায়ী করা হয়। পার্বত্য অঞ্চলে অত্যাধিক বৃষ্টিপাতের কারণে মাটি, পাথর জলে ভিজে আলগা ও ভারি হয়ে যায় ।তখন মাধ্যাকর্ষণ শক্তি টানে ধ্বস নামে। এই কারণেই সিমলা সহ সমগ্র উত্তরাঞ্চলে ধস নামে।

অভিকর্ষজ বল

প্রত্যেক বস্তুরই একটি সাধারণ ধর্ম হল মহাকর্ষ ।পৃথিবীতে যেকোনো দুটি বস্তু একে অপরের টানে অর্থাৎ নিউটনের সূত্র অনুযায়ী উপরে থাকা কোন বস্তুকে পৃথিবী নিজের দিকে টেনে রাখে যা অভিকর্ষ সূত্র নামে পরিচিত। আর এই কারনেই কোন বস্তু যখন পৃথিবীর দিকে আসে তখন তার গতি বৃদ্ধি পায় অভিকর্ষজ ত্বরণ নামে পরিচিত ।একে ইংরেজি g দিয়ে বোঝানো হয় ।ধস এর ক্ষেত্রে এই g এর গুরুত্ব বেশি।

পাথর আলগা হওয়া

পার্বত্য অঞ্চলে বহুদিন ধরে জল, বাতাস ,গাছের শিকড়ের চাপ, বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থের বিক্রিয়া প্রভৃতির কারণে পাথর ফেটে যায়। দুর্বল হয়ে পড়ে । ফলে ঐ দুর্বল পাথরের স্তুপ ধস হয়ে নিচের দিকে নামতে থাকে।

ভূমিক্ষয়

ভারতের পার্বত্য অঞ্চলে ভূমিক্ষয় তীব্র ভাবে ঘটছে ।এর হার 1mm/ প্রতি বছর অর্থাৎ সমস্ত হিমালয়কে সমতলভূমি ভাবলে প্রতিবছর 1 mm মৃত্তিকা স্তরের ক্ষয় হচ্ছে ।এই ক্ষয়ের হার বর্তমানে প্রায় 5 গুণ বেশি।

ঢালের নতি

ধসের প্রাবল্য নির্ভর করে ঢাল বরাবর নতির উপর । ঢালের নতি কম হওয়ার কারণে ঢাল বরাবর কাজ করে বলের উপাংশের পরিমাণও কমে যায় ।আবার ঢালের নতি বেশি হওয়ার কারণে তা বেড়ে যায় ।ঢালের উপরের দিকে কোনো কারণে ওজনের পরিমাণ বেড়ে গেলে ধসের সম্ভাবনা বহুগুণ বেড়ে যায়।

ভূকম্পন

1950 সালে অরুণাচল প্রদেশের বড় ধরনের ভূকম্পন ঘটেছিল। এর ফলে ধসের মতো বিপর্যয় ঘটেছিল ।পাহাড়ি অঞ্চলে ভূমিকম্পের সঙ্গে ধসের একটা সম্পর্ক আছে। ভূকম্প তরঙ্গগুলো রেগোলিথের মধ্যে দিয়ে যায় । স্বাভাবিকভাবেই এই ধরণের কম্পন গুলো ঢাল  বরাবর গরিয়ে যেতে  সাহায্য করে। শিলাস্তরের টুকরোগুলো নানান আকার আকৃতির হয় ।এর ফলেও ধসের কাজ  সহজতর হয়। 

এছাড়া অগ্ন্যুৎপাতের ফলেও ভূমিধস ঘটতে পারে।

মনুষ্য সৃষ্ট কারণ

ধস এর ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক কারণ এর সঙ্গে মনুষ্যসৃষ্ট কারণগুলো সমানভাবে দায়ী ।এই গুলি হল

অরণ্য নিধন

অরণ্য নিধন করলে তখন গাছপালার আবরন সেই ভূমির উপর থাকে না ।এই অবস্থায় বৃষ্টির জল দিনের পর দিন মাটির মধ্যে অনবরত ঢুকে যায়।  মাটির দুর্বল হয়ে পড়ে খসে পড়ে ।ধ্বস নামে।

অপরিকল্পিত চিন্তাভাবনা

দুর্বল ও খাড়াই পাহাড়ি ঢালে নিয়ম না মেনে বাড়িঘর রাস্তাঘাট বানালে দুর্বল মাটিতে খুব গভীরে শিকড় প্রবেশ করাতে পারে এমন গাছ পুঁতলে শহরের জঞ্জাল অনেকদিন ধরে পাহাড়ের ঢালে জমা করে করা হলে ধ্বস নামে ।দার্জিলিং গ্যাংটক এর আশেপাশে এ কারণে বহুবার ধ্বস হয়েছে।

উপযুক্ত কারণ গুলি ছাড়াও জল জমা, মানুষের বিভিন্ন কার্যাবলী যেমন বাঁধ নির্মাণ মৃত্তিকা ও খনি খনন প্রভৃতি কারণেও ধস সৃষ্টি হতে পারে।

ধ্বস জনিত বিভিন্ন সমস্যা

ধস ও পরিবেশগত সমস্যা

যদিও ধস প্রাকৃতিক ঘটনা তথাপি এটি পরিবেশ ও মানুষের কাছে ইদানিং বেশ সমস্যা হয়ে দেখা দিচ্ছে ।এর ফলে একদিকে যেমন বসতবাড়ি গাছপালা রাস্তাঘাট প্রভৃতির মতো সম্পত্তির ক্ষতি হয়।

ধস জনিতো বিভিন্ন সমস্যা গুলি হল

i)ধ্বস নামলে গাছপালা ভেঙে পড়ে। ফলে বনভূমি নষ্ট হয়।

ii)ধসে যাওয়া মাটি সাধারণত বালি, কাঁকর পাথরে ভর্তি থাকে ।ফলে মাটির গুণাগুণ নষ্ট হয় ।আর যেখান থেকে ধস নামে সেখানে পাহাড়ের ঢালে কঠিন পাথর বা শিলাস্তর বেরিয়ে পড়ে। তাই ধসের ফলে সেখান থেকে নামলে আলগা পাথরে মাটি সেখানে নেমে জমা হল সেই জায়গায় মাটি ক্ষতি হয়।

iii)ধস নামার জন্য পাহাড়ের ঢাল নষ্ট হয় অর্থাৎ পাহাড়ি ঢাল আরো খাড়াই হয়। দুর্বল হয়। ওই নষ্ট হওয়া ঢালের উপর বাড়িঘর রাস্তাঘাট তৈরি করা যায় না।

iv)পাহাড়ি অঞ্চলের ধস অনেক সময় নামতে নামতে নদীর বুকে এসে জমা হয় এবং নদীর পথ আটকে যায়। তখন ওই অস্বাভাবিক বাঁধের পিছনে জল জমতে থাকে ।বর্ষার জলের চাপে ওই বাঁধ ভেঙে গেলে প্রবল জ্লের তোড়ে নদীর দু'পাশে বন্যা হয় ।এইভাবে 1968 সালে তিস্তা নদীর বন্যায় জলপাইগুড়ি ভেসে গিয়েছিল।

v)ধস নামার অন্য এক পরিনতি  হলো ভূমিক্ষয় বৃদ্ধি পায়।

ধস মানুষের সমস্যা

i)ধসের ফলে বাড়িঘর ভেঙে যায়। এমনকি বড় আয়তনের ধস নামলে  একটা গ্রামও ধ্বংস হতে পারে ।

ii)ধ্বস নামলে রাস্তাঘাট নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায় ।

iii)চা বাগান কমলালেবু আপেল প্রভৃতি চাষে ক্ষতি হয়।

iv)ধ্বস নামার ফলে চাষাবাদের ব্যাপক ক্ষতি হয় লক্ষ লক্ষ টাকার ধান জোয়ার বাজরা আলু শাক সবজি নষ্ট হয়।

v)ধ্বস নামার ফলে রাস্তাঘাট ক্ষতি হওয়ার দরুন পাহাড়ি অঞ্চলে পর্যটন শিল্পের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

vi)ধসের ফলে মানুষের প্রাণহানি ঘটে গৃহপালিত জীব জন্তু মারা যায়।

ধস নিয়ন্ত্রণ এর উপায়

ধস একটি বৃহৎ প্রাকৃতিক বিপর্যয় এই প্রাকৃতিক বিপর্যয় নিয়ন্ত্রনের উপায় গুলি হল

i)যেখানে সেখানে বাড়িঘর রাস্তাঘাট তৈরি না করা।

ii)বাড়িঘর রাস্তাঘাট সেতু প্রভৃতি নির্মাণ করার আগে ওই এলাকার মাটি পাথর ইত্যাদি কতটা চাপ সহ্য করতে পারে তার ভূ-তাত্ত্বিক পরীক্ষা করা উচিত।

iii)পাহাড়ের ঢালে যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলা বন্ধ করা দরকার।

iv)জমির সঠিক ব্যবহারের জন্য পরিকল্পনা করা প্রয়োজন এবং সমস্ত রকম নির্মাণ পরিকল্পনামাফিক হওয়া প্রয়োজন।

v)ধস নামলে লোকজনদের প্রাণরক্ষা করার জন্য নিরাপদ আশ্রয় গড়ে তোলা প্রয়োজন।

vi)ধস প্রবন এলাকায়  মাটির মধ্যে যাতে জল জমতে না পারে এবং উদ্বৃত্ত জমা জল যাতে সহজে বেরিয়ে আসে তার জন্য বিভিন্ন কারিগরি পদ্ধতি অবলম্বন করা দরকার।

vii)পাহাড়ের দুর্বল ঢাল যাতে ধসে না পড়ে সে জন্য বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করে পাঁচিল গেঁথে দেওয়া দরকার।

viii)পাহাড়ি ঢালে নতুন করে গাছ লাগানো দরকার এবং বেআইনি গাছ কাটা বন্ধ করা প্রয়োজন।

সবশেষে জনমত সংগ্রহ করে ধসের বিপদ সম্বন্ধে সজাগ ও সচেতন মতামত গড়ে ওঠা জরুরি।


কিছু সাম্প্রতিক ঘটনা

Sunday, June 14, 2020

ডেভিসের ক্ষয়চক্র মতবাদ (Cycle of Erosion)

ডেভিসের ক্ষয়চক্র মতবাদ

(Cycle of Erosion)

Prepared by:Rajesh Chatterjee

কাদের জন্য প্রয়োজনীয়: বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষা ।

ওয়েস্ট বেঙ্গল বোর্ডের একাদশ শ্রেণি, ডিগ্রি কোর্সের পাস ও অনার্স এবং পোস্ট গ‍্যাজুয়েট ছাত্র ছাত্রী ।


(আজকের আমার এই লেখার মাধ্যমে ডেভিসের ক্ষয়চক্র মতবাদ কাকে বলে এর পর্যায় গুলো কি কি এবং এই ক্ষয়চক্র সংগঠিত হতে গেলে কি কি অবস্থা প্রয়োজন সমালোচনা সহ আলোচনা করব ।)


ভূমিরূপের বিবর্তন সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে উইলিয়াম মরিস ডেভিস সর্বপ্রথম 1899 সালে প্রথম ক্ষয়চক্র ধারণার প্রবর্তন করেন তার মতে কোন একটি নির্দিষ্ট গঠন যুক্ত অঞ্চলে বিভিন্ন প্রকার বাহ্যিক প্রক্রিয়ার (নদী, হিমবাহ, বায়ুপ্রবাহ প্রভৃতি)মাধ্যমে ধীরে ধীরে ধারাবাহিকভাবে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে ওই স্থানের ভূমিরূপ গঠনে সাহায্য করে ।এইভাবে ক্ষয় কার্যের ফলে একসময় কোন স্থানের উন্নত বা উঁচু ভূমিরূপ ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে সমুদ্রতলের নিকটবর্তী একটি সমপ্রায় ভূমি সৃষ্টি করে এবং পুনরায় ভূ আলোড়নের ফলে ভূমিভাগ উত্থিত হয় ও সেখানে আবার ক্ষয়চক্র শুরু হয়ে যায় এইভাবে চক্রাকারে ভূমি ভাগের বিবর্তনকে ডেভিস ক্ষয়চক্র বা cycle of erosion বলে অভিহিত করেছেন ।

এই বিখ্যাত আমেরিকান ভূবিদ উইলিয়াম মরিস ডেভিসের এর মতে a landscape has a define life history during which it shows gradual changes, whereby the initial forms pass through a series of sequential form to an ultimate form.

অর্থাৎ যেকোনো ভূমিভাগের একটি সুনির্দিষ্ট জীবন ইতিহাস আছে এবং জীবনকালের মধ্যে ক্রমিক পর্যায়ে ভূমিচিত্রটির  নিয়মিত পরিবর্তনগুলো প্রকাশ পায় ফলে বিচিত্র প্রাচীন অবস্থা থেকে পর্যায়ক্রমে শেষ পরিণতিতে পৌঁছায় ।


ডেভিস এর মতে গঠন, পর্যায় ও প্রক্রিয়া এই তিনের ফলশ্রুতি ভূমিচিত্র বা ভূমিরূপ ।

Landscape is function of structure,process and stage . 

Davis গঠন ( structure ) বলতে শিলার কাঠিন্য (hardness),প্রবেশ্যতা (provity),নতি (dip), ভাঁজ( fold) শিলালক্ষণকে  (lithology) বুঝিয়েছেন প্রক্রিয়া(process) বলতে আবহবিকার পুঞ্জিত ক্ষয় (mass wasting ) নদী, বায়ু, হিমবাহ, সমুদ্রতরঙ্গ প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তিগুলিকে বলেছেন যারা ভূপৃষ্ঠের উপর ক্রিয়াশীল রয়েছে ।সর্বশেষে কত সময় ধরে উপযুক্ত প্রাকৃতিক শক্তি গুলি করছে তাকে তিনি পর্যায়ে বলেছেন সাধারণভাবে এ তিনটি মূল উপাদান ভূমিরূপ এর উৎপত্তি ও গঠন সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

ক্ষয় কার্যের প্রক্রিয়ার বিভিন্নতা অনুযায়ী ভূমিরূপের বিবর্তনের ধারা বিভিন্ন প্রকার হয়। তার আদর্শ ক্ষয়চক্রের ভিত্তি হলো নাতিশীতোষ্ণ ক্রান্তীয় অঞ্চলের কার্যাবলী অর্থাৎ এই দুটি জলবায়ু অঞ্চলে ক্ষয়চক্র তার এই বিবর্তন কে ভালোভাবে চালিয়ে নিয়ে যেতে পারে। এই অঞ্চলের নদী বা জলধারার দ্বারা ক্ষয়কার্যের ফলে যে ক্ষয়ের ধারা নির্দিষ্ট হয় তাকে স্বাভাবিক ক্ষয়চক্র বলে।

ডেভিসের স্বাভাবিক ক্ষয়চক্রের গতি প্রকৃতি পর্যালোচনা করলে পরিষ্কারভাবে বোঝা যাবে যে সংশ্লিষ্ট ভূমি তার ক্ষয়চক্র প্রক্রিয়ার মধ্যে কয়েকটি সুনির্দিষ্ট পর্যায় অতিক্রম করে ।

পৃথিবীর উপরিভাগে পরিবর্তনের কাজ আদি অন্তহীন ভাবে চলতে থাকলেও তার মধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ের চিত্র সুস্পষ্ট থাকে।

 ক্ষয়চক্রের এই বিষয়টি বোঝানোর উদ্দেশ্যে ডেভিস নিম্নলিখিত তিনটি সুনির্দিষ্ট পর্যায়ের উল্লেখ করেন ।

এই পর্যায়ে গুলি হল


যৌবন অবস্থা :

ভূমি ভাগের উপর ক্ষয়চক্র যে অবস্থার সৃষ্টি হয় সেই মুহূর্ত থেকে ভূভাগের যৌবন অবস্থা সূচনা ঘটে তিনি তার মডেলে বলেছেন ভূ-উত্থান কালে বিশেষ ক্ষয়কার্য থাকবে না এবং

ক্ষয়প্রক্রিয়া একটি সুস্থিত ভুমিরুপ এর উপর কাজ করবে প্রাথমিক অবস্থায় বৃষ্টির ফলে প্রাকৃতিক ঢাল অনুসারে দিয়ে প্রবাহিত হয়ে অনুগামী নদী সৃষ্টি করবে এই অনুগামী নদী থেকে বহু সংখ্যক উপনদীর সৃষ্টি হয় ও এরা প্রসারিত হতে থাকে এই পর্যায়ে ভূমির বন্ধুরতা যথেষ্ট বৃদ্ধি পায় ।নদী গুলি দ্রুত ক্ষয়সাধন করে এবং নদী উপত্যকা, সংকীর্ণ ও গভীর গিরিখাতের সৃষ্টি করে ।এই অবস্থায় নদীতে জলপ্রপাত দেখতে পাওয়া যায় এবং নদী তলদেশে মন্থকূপ এর  সৃষ্টি হয় ।

দুটি অনুগামী নদীর মধ্যবর্তী ভূভাগ প্রথমে প্রশস্ত ও চ্যাপ্টা শৈলশিরা রূপে অবস্থান করে এবং পরে  ক্ষয় কার্যের দরুন জলবিভাজিকাটি সংকুচিত ক্ষয় প্রাপ্ত হয়। এই অবস্থায় ভূমির বন্ধুরাতা সর্বাধিক হয় এবং ভূমিরূপ পরিণত অবস্থার দিকে অগ্রসর হয়।


পরিণত অবস্থা :

ক্ষয়চক্রের ফলে ভু উত্থানের সময়কার চিহ্নসমূহ যখন একেবারে লোপ পায় তখন পরিণত অবস্থায় সূচনা ঘটে যৌবন অবস্থায় ভূমিরূপ বন্ধুরা তা যেরূপ বর্ধিত হয় পরিণত অবস্থায় ভূমির বন্ধুরা তা  সেইরূপ কমতে থাকে এই অবস্থায় নদীর মধ্যবর্তী জলবিভাজিকা গুলির নিচু হয়ে যায় এবং জলপ্রপাত গুলি অদৃশ্য হয়ে যায় এবং নদীগুলি এঁকেবেঁকে

প্রবাহিত হয় । নদী দ্বারা  প্লাবন ভূমির সৃষ্টি হয় । প্লাবন সমভূমি স্বাভাবিক বাঁধ
সৃষ্টিতে সাহায্য করে থাকে এই পর্যায়ে অল্প ঢাল বিশিষ্ট সমগ্র ভূমি  ভাগ  ক্ষয়প্রাপ্ত শিলা চূর্ণ দ্বারা আবৃত থাকে এবং এরপর থেকে ভূমিরূপ বার্ধক্য অবস্থার দিকে অগ্রসর হয়।


বার্ধক্য অবস্থা:

দীর্ঘদিন ধরে ক্ষয় কার্যের ফলে ভূমিরূপ নিচু ও সমতল হতে থাকে অবশেষে বাধ্যক্য অবস্থায় নদীর ক্ষয়কার্য বন্ধ হয়ে যায় এবং বহন কার্য বহুলাংশে কমতে থাকে কারণ নদীর বক্ষের গভীরতা পরিণত অবস্থা শেষভাগে বহু নিম্নে পৌঁছায় এবং সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উপত্যাকার উচ্চতা খুব অল্প থাকে এই পর্যায়ে নদীর শক্তি হ্রাস পায় এবং উপত্যাকা পাশের ঢাল কমে যায়। প্লাবন সমভূমির উপর দিয়ে নদী গুলির ধীরগতিতে গতিপথ পরিবর্তন করে চলতে থাকে ।

নদীর বাঁক ক্রমশ ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে মূলনদী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদের সৃষ্টি করে

এবং সমগ্র ভূমিভাগএকটি সমপ্রায় ভূমি( peneplain)
এবং তার মাঝে মাঝে কঠিন শিলাময় পাহাড় দেখা যায় ।এই পাহাড়গুলি ক্ষয়কার্য প্রতিরোধ  করে অবশিষ্টাংশ রূপে অবস্থান করে ।

এই পাহাড়্গুলি কে  মোনাডনক বলে।

একটি ক্ষয়চক্র শেষ করতে অনেক সময় লাগে


অনেকক্ষেত্রে এটি সম্পূর্ণ হতে পারে না কারণ ক্ষয়চক্রের শেষ অবস্থায় বহু ক্ষেত্রে ভূমির উন্নয়ন ঘটে। একে ভূমির পুনযৌবন বলে ।

সমালোচনা : যদিও ডেভিস এই ভূমিরূপ পর্যালোচনায় গভীর এক নতুন দিগন্তের সৃষ্টি করেছিল তবুও কয়েকজন ভূতত্ত্ববিদ এই শতকের দ্বিতীয় ভাগে ডেভিসের আলোচনা সমালোচনা করেন

1) ডেভিসের আলোচনা অনুযায়ী একটি স্বাভাবিক ক্ষয়চক্রের শেষ হয় সমপ্রায় ভূমিতে এর জন্য যে বিশাল পরিমাণ সময়ের প্রয়োজন সেই সময়ের মধ্যেই বিভিন্ন কারণে নদীর পুনর্যৌবন লাভ ঘটবেই সুতরাং কোনদিন শেষ হবে না

2) ডেভিস বলেছেন সমুদ্র তলদেশ থেকে একটি নতুন ভূমি ভাব সম্পূর্ণ উন্নতি হওয়ার পর ক্ষয়কার্য শুরু হয় ক্রিমে পত্রল নতুন বিভাগ উত্থান ও ক্ষয়কার্য একই সঙ্গে চলতে থাকে বিজ্ঞানীগণ একে অসম বিকাশ তত্ত্বের আখ্যা দিয়েছেন।

3) ডেভিসের ক্ষয়চক্রের ভূমি ভাগের উপর গাছপালা মৃত্তিকা ও জীবজগতের কোন প্রভাবের উল্লেখ করেননি।

4) ডেভিস সময়ের উপরে যতটা গুরুত্ব আরোপ করেছেন শিলার গঠন ও প্রক্রিয়ার ওপর ততটা প্রাধান্য দেননি।

5) বর্তমান পৃথিবীতে ডেভিসের মতানুযায়ী সমপ্রায় ভূমি কোন উল্লেখযোগ্য উদাহরণ নেই।

6) ডেভিস বলেছেন শৈলশিরা গুলি উচ্চতা নিম্নমুখী ক্ষয়ের ফলে হ্রাস পায় কিন্তু Penck এর ভাষা অনুযায়ী শৈলশিরা গুলোর উচ্চতা পশ্চাৎ দেশীয় ক্ষয়ের ফলে কমে।


উপযুক্ত কারণে ডেভিসের স্বাভাবিক ক্ষয়চক্র সমালোচিত হলেও এটা ঠিক যে এই মতবাদ নতুন  তথ্যের যোগান দিয়েছিল সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।


এখান থেকে আমাদের নিম্নলিখিত এই প্রশ্নগুলির উত্তর তৈরী করতে হবে।

  1. ক্ষয়চক্র কাকে বলে ?

  2. ক্ষয়চক্রের প্রক্রিয়াগুলির নাম লেখ ।

  3. ডেভিসের ক্ষয়চক্র কোন কোন জলবায়ুতে কাজ করতে পারে?

  4. সমপ্রায় ভূমি কাকে বলে?

  5. ভূমির পুনর্যৌবন কাকে বলে?

  6. মোনাডনক কি?

  7. ডেভিসের ক্ষয়চক্রের মতামতটি বিপক্ষে কি কি যুক্তি আছে?

  8. অনুগামী নদী কাকে বলে?

  9. জলপ্রপাত কিভাবে সৃষ্টি হয় ?

  10. আঁকাবাঁকা নদী উপত্যকা ক্ষয়চক্রের কোন পর্যায়ে সৃষ্টি হয়?

  11.  জলবিভাজিকা বলতে কী বোঝো?

  12. সংকীর্ণ ও গভীর উপত্যাকা ক্ষয়চক্রের কোন পর্যায়ে সৃষ্টি হয়?


Wednesday, May 20, 2020

করোনা ও আপনি

করোনা ও আপনি

আমার ভারতবর্ষ আজ অতি গণতান্ত্রিক আর এই অতি গণতান্ত্রিক ভারতবর্ষে কিছু মানুষ না মানবো না এই চিন্তা ভাবনার ভাবনায় নিজেকে অলংকৃত করার চেষ্টা করেন যাতে গায়ে একটা বেশ বুদ্ধিজীবী বুদ্ধিজীবী গন্ধ বের হয়।
বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় একটা রাষ্ট্রবিরোধী বা দেশের প্রধানের বিরোধী কোন বক্তব্য ছবি ভিডিও পোস্ট না করলে ভাবেন আমিও বোধহয় জয় গোস্বামী অথবা অপর্ণা সেন দের সমগোত্রীয় হলাম না । আবার কিছু মানুষের মধ্যে আইন ভাঙার প্রবণতা রয়েছে বা তৈরি হচ্ছে তার উপর শাখের করাত  ভারতের প্রধানমন্ত্রী বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলের। যাকে অনেকে ধর্মের শত্রু বলে ভাবতে শুরু করেছেন।
আমার এই লেখা পড়ার পর আমি জানি অনেকেই বিভিন্ন কমেন্ট করবেন এতে আমার বাবা মা বা পূর্বপুরুষরা উদ্ধার না হলেও আমার সাম্প্রদায়িক বা রাজনৈতিক রং চেনার চেষ্টা করবেন সে বিষয়ে আমার কোন সন্দেহ নেই।আর এতে আমার কিছু যায় আসে না ।
ভূমিকাটা বড্ড বেশি করে ফেললাম এবার আসি মূল কথায়। আজকে আমার লেখার মূখ‍্য উদ্দেশ্য 21 দিনের লকডাউন ,কেন্দ্র ও রাজ্য প্রশাসনের নির্ধারিত নীতি ও প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য। প্রথমেই আসি 21 দিনের লকডাউন এর প্রসঙ্গে।
প্রশ্নটা হল 21 দিনের লকডাউন আমরা কি মানছি ? নাকি সুন্দর পাজামা-পাঞ্জাবী পরে প্রতিদিন বাজার করতে বেরোচ্ছি ভাবটা এমন প্রতিদিন বাজার করব এবং টাটকা শাক-সবজি মাছ-মাংস কিনব! আবার দেখুন মাংসের দোকানে 700 টাকা কেজি হলেও তা কিন্তু পড়ে থাকছে না। কিন্তু পাশে বসে থাকা টোটো চালক ধনঞ্জয় সে কিন্তু লকডাউনে ধরা পড়েছে । কিন্তু আপনি ধরা পড়েননি তাই ইনজয় করে যাচ্ছেন।
আবার অনেকের ধারণা বাজার করলে করোনা হয় না বা আমার অন্তত করোনা হবে না । আমার শরীর স্বাস্থ্য খুবই সুগঠিত এবং আমার ভগবান অথবা আল্লাহ আমার সহায় রয়েছে। অথবা করোনা একমাত্র তাদেরই হবে যারা ধর্ম মানে না অথবা ধর্মবিদ্বেষী ।
এবার আসি প্রধানমন্ত্রী কিছু বক্তব্য সম্পর্কে। যেদিন প্রথম জনতা কার্ফু হল সেদিন প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন বিকেলবেলায় আমরা সবাই যার কাছে যা আছে ঘন্টা, থালা না থাকলে হাততালি দিয়ে করোনা সৈনিকদের  সম্মান জানাবো। কিন্তু এখানেও বিরোধিতা। বিরোধিতা কি নিয়ে? নাকি হাততালি দিয়ে করোনা কে তাড়ানো যাবে না। এই নিয়ে নানা বক্তব্য ফেসবুক হোয়াটসঅ্যাপে আমরা দেখতে পেলাম।
এবার আসি প্রধানমন্ত্রীর পরের বক্তব্য নিয়ে। কি বললেন 5 ই এপ্রিল নটায় নয় মিনিটের জন্য আমরা আলো নিভিয়ে মোমবাতি বা প্রদীপ জ্বালাবো।
দেখুন এখানেও বিরোধিতা। কারণ এই সমস্ত মানুষদের বিরোধিতা করতেই হবে এবং বিরোধিতা করার জন্যই এদের জন্ম হয়েছে ভুন্ডুল রাশিতে । মানবো না এই কারনে ।নাকি এতে ধর্মের সুড়সুড়ি রয়েছে!
আচ্ছা বলুন তো আমরা দেওয়ালিতে কি প্রদীপ জ্বালাই না ? সবেবরাতের দিনে কি আমাদের মুসলমান ভাইয়েরা বোনেরা বারান্দায় মোমবাতি জ্বালায় না।গির্জাতে খ্রিস্টান মানুষেরা মোমবাতি কি কোনদিন  জ্বালায় নি ?
নাকি আমরা ভুলে গেছি কলকাতার রাস্তায় বিদ্বজনদের মোমবাতি মিছিল ! নাকি সেখানে শুধু হেঁটেছিল কিছু বিশেষ ভাই-বোনেরা।
নির্ভয়া এর বিচার চেয়ে আমরা তো মোমবাতি জ্বালিয়েছি। মোমবাতি জ্বালিয়ে আত্মার শান্তি কামনা করেছি তাপসী মালিকের জন্যে ও।
কিন্তু আজকে এত দ্বিধা কেন ? কেন এত কুন্ঠিত বোধ করছি বাড়ির ছাদে, বারান্দায় কিংবা ব্যালকনিতে একটা প্রদীপ কিংবা মোমবাতি জ্বালাতে।
আমরা কি পারি না করোনা আক্রান্ত যে সহ নাগরিকরা আমাদের মধ্যে নেই তাঁদের আত্মার শান্তি কামনা করতে ।
আমরা কি পারিনা যেসব স্বাস্থ্য কর্মী পুলিশকর্মী, ব্যাঙ্ক কর্মী মুদিখানার দোকানদার ,বাজারের সবজি বিক্রেতা, মাছ বিক্রেতা যারা করোনার সংক্রমণের ভয় থাকা সত্বেও প্রতিদিন আমাদের এই পরিস্থিতিতে সেবা করে যাচ্ছেন।
আমরা কি এটাও পারিনা ? যে সমস্ত করোনা রোগী মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে যাচ্ছেন তাদের আর একটু ভরসা দিতে আমরা তোমাদের পাশে আছি বন্ধু !আছি তোমার পরিবারের সঙ্গে।
আসুন না আজকে যারা প্রদীপ জ্বালাতে পারলেন না । তারা একবার অন্তত প্রদীপ জ্বালায় । এর জন্য কোনো নিঘন্ট তিথি লাগে না । লাগে না কাউর অনুরোধ । অন্তত এই জন্য এই কাজটি করি যাতে সবার মধ্যে একটা ভরসার জায়গা তৈরি হয় হ্যাঁ আমরা রয়েছি সবার সঙ্গে। সবাই আমরা একটা প্রদীপ জ্বালি আর উচ্চস্বরে না গাইতে পারি অন্তত মনে মনে গুনগুন করে গাই–
কিশোর কুমারের সেই বিখ্যাত হিন্দি গান।
দ্বিয়ে জ্বলতে হে।
ফুল খিলতে হে ।
বরি মুসকিল সে ,মগর

দুনিয়া মে দোস্ত মিলতে হে ।

আর যারা প্রদীপ জ্বালাতে পারলেন না তারা অন্তত ফেসবুক হোয়াটসঅ্যাপে আর আগুন জ্বালাবেন না।
লেখা শেষ করতে করতে আরেকটা সুখবর দিই । সেটা হচ্ছে ভারতবর্ষের কোন জায়গায় গ্রিড বিপর্যয় হয়নি অর্থাৎ ব্ল্যাক আউট হওয়ার সম্ভাবনা আর নেই। শুধুমাত্র মনের মধ্যে কোন ব্ল্যাকআউট রাখবেন না। সরকার ও প্রশাসনের কথা মেনে চলুন ঘরে থাকুন।

Sunday, May 17, 2020

"নানা জায়গায় নানা সম্পদ" Class V

"নানা জায়গায় প্রকৃতির নানা সম্পদ"

ক্লাস : পঞ্চম শ্রেণি । পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সিলেবাস অনুযায়ী।


পশ্চিমবঙ্গের সম্পদ
নানা জায়গায় প্রকৃতির নানা সম্পদ

তোমরা যারা ক্লাস ফাইভে পড়ো তোমাদের
"আমাদের পরিবেশ" বইতে পরিবেশ ও সম্পদ চ্যাপ্টারের অন্তর্গত একটি চ্যাপ্টার এর নাম
"নানা জায়গায় প্রকৃতির নানা সম্পদ"।
এই চ্যাপ্টার সম্পর্কে আলোচনা করার আগে চ্যাপ্টারের যে নাম রয়েছে "নানা জায়গায় নানা সম্পদ" এর অর্থ টা আমরা একটু বুঝে নেব। দেখো নানা জায়গা মানে আমাদের পৃথিবী তারমধ্যে আমাদের প্রিয় ভারতবর্ষ অবশেষে আমাদের রাজ্য ।এই রাজ্যের তথা ভারত বর্ষ বা পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় নানান সম্পদ পাওয়া যায়। এবার তোমাদের মধ্যে একটা প্রশ্ন জানতে ইচ্ছা করছে সেটা হলো 
সম্পদ কাকে বলে ?
সম্পদ হলো যা মানুষের কাজে লাগে অর্থাৎ সেটা কোন বস্তু বা পদার্থ হতেও পারে আবার নাও হতে পারে কিন্তু তার একটা চাহিদা থাকতে হবে তবেই তাকে বলবে সম্পদ।
যেমন ধরো কয়লা একটি বস্তু আমাদের কাজে লাগে তাই সম্পদ আবার আমাদের শিক্ষা দীক্ষা জ্ঞান এইগুলো কিন্তু কোন বস্তু বা পদার্থ নয় কিন্তু এইগুলোও সম্পদ।

এবার আমরা জেনে নেব 
পশ্চিমবঙ্গে কিকি সম্পদ পাওয়া যায় ?
এবং 
এই সম্পদ গুলো কোথায় কোথায় পাওয়া যায়?
edutake tutorial
পশ্চিমবঙ্গের অবস্থান
এই হল আমাদের প্রিয় ভারতবর্ষ এবং তার মধ্যে এটা আমাদের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ  ।
খনিজ সম্পদ উত্তোলনে পশ্চিমবঙ্গ ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম রাজ্য ।পশ্চিমবঙ্গের যে খনিজ সম্পদ পাওয়া যায় তার 99%ই হলো কয়লা ।
আমাদের এই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে কয়লা ছাড়াও যে সম্পদ গুলো পাওয়া যায় তার নাম হলো আকরিক লোহা ,বিভিন্ন প্রকার পাথর ,চুনাপাথর ,ডলোমাইট, ফায়ার ক্লে, চিনামাটি, তামা, এবং অল্প পরিমাণে প্রাকৃতিক গ্যাস ও খনিজ তেল ।
এছাড়া পার্বত্য মালভূমি অঞ্চল ও সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ বনভূমিও সম্পদের উদাহরণ হিসাবে বলতে পারি।



এবার আলোচনায় আসি যে -পশ্চিমবঙ্গের কোথায় কোথায় কি কি সম্পদ পাওয়া যায় ?

পশ্চিমবঙ্গে যা খনিজ সম্পদ পাওয়া যায় তার বেশিরভাগই কিন্তু কয়লা ।
কয়লা উত্তোলনের পশ্চিমবঙ্গ ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম রাজ্য। বর্ধমান, রানীগঞ্জের মোটামুটি 228 টি কয়লা খনি থেকে এই কয়লা উত্তোলনের কাজ করা হয়।এছাড়া উন্নত বিটুমিনাস কয়লাও পাওয়া যায় রানীগঞ্জ ,সাঁওতালডিহি , কুলটি, বরাকর প্রভৃতি অঞ্চলে।
এছাড়া দার্জিলিংএ লিগনাইট কয়লার খনিও আছে।
বাঁকুড়ার মেজিয়া ও বীরভূমের মোহাম্মদ বাজারের পাওয়া যায় চিনামাটি ।
সিমেন্ট শিল্পে ব্যবহৃত চুনাপাথর বাঁকুড়া , পুরুলিয়া , দার্জিলিং এবং জলপাইগুড়িতে খনন করা হয় । 
এছাড়া তামার খনি আছে জলপাইগুড়ি ও দার্জিলিংয়ে । 
বর্ধমান, পুরুলিয়া, বীরভূম এবং দার্জিলিংয়ে স্বল্প পরিমাণে নিম্নমানের লোহা খনির সন্ধান পাওয়া গেছে। 
অল্পবিস্তর ম্যাঙ্গানিজ পাওয়া যায় ঝাড়গ্রাম অঞ্চলে, পশ্চিম মেদিনীপুর , পুরুলিয়া এবং বর্ধমানে।
ডলোমাইটের উত্তোলন করা হয় ডুয়ার্স ও জলপাইগুড়ির অঞ্চলে । 

এতক্ষণ যে সম্পদগুলোর আলোচনা করছিলাম সবগুলোই কিন্তু প্রাকৃতিক সম্পদের অন্তর্গত এবং এগুলোকে প্রাকৃতিক সম্পদ বলে।

এছাড়া আরো অনেক প্রকার সম্পদ আছে যেমন ধরো অর্থনৈতিক সম্পদ ,দেশীয় সম্পদ আন্তর্জাতিক সম্পদ প্রভৃতি।
যেমন ধরো সমুদ্র এটা কিন্তু আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মধ্যে পড়ে।
আবার বনভূমি, সমুদ্রের মাছ এই সম্পদগুলো কে বলে পুনর্ভব সম্পদ কারণ এই সম্পদগুলো কোনদিন  ফুরিয়ে যাবে না যেমন কয়লা একটি গচ্ছিত সম্পদ এই সম্পদ একদিন  ফুরিয়ে যেতে পারে।
তেমনি ধরো সূর্যকিরণ বাতাস এইগুলো কিন্তু অফুরন্ত সম্পদ এমনকি যে মাটিতে তুমি দাঁড়িয়ে আছো বা যার ওপর আমাদের সোনার ফসল ফলছে সেই মাটিও কিন্তু সম্পদের উদাহরণের মধ্যেই পড়ে ।

তোমরা ওপরের আলোচনা থেকে সম্পদ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আকারে জানলে আর এটাও জানলে যে সব সম্পদ কিন্তু একই জায়গায় পাওয়া যায় না ।এই সম্পদগুলো বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ।মানুষ এইগুলোর খোঁজ করে ,এইগুলো কে কাজে লাগায় এক্ষেত্রে মানুষকে সহায়তা করে মানুষের শিক্ষা জ্ঞান বুদ্ধি প্রযুক্তি অর্থাৎ মানুষের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি প্রভৃতি ।মানুষের এই জ্ঞান ও প্রযুক্তির দ্বারাই কিন্তু নতুন নতুন সম্পদের সৃষ্টি হয় এবং আমরা সহজভাবে ব্যবহার করতে পারি।
এবার তোমাদের এই সম্পদ সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন করব সেগুলো উত্তর করে আমাকে পাঠিয়ে দাও।

1)সম্পদ কাকে বলে?
2) মাটি কেন সম্পদ ?
3) পশ্চিমবঙ্গের কোথায় লালমাটি দেখা যায়?
4) লালমাটি অঞ্চলে কেন ধান চাষ হয় না?
5) লালমাটি অঞ্চলে কি আছে যে মানুষের কাজে লাগে?
6) পাহাড়ি অঞ্চলের শক্ত পাথর দিয়ে আমরা কি কি কাজ করতে পারি?
7) কার্শিয়াং অঞ্চলের কি রকম ভূমিরূপ দেখা যায়?
8) কার্শিয়াং অঞ্চলে কি ফসল চাষ করা হয়?
9) কোথায় চা বাগান রয়েছে?
10) ভূমি বা জঙ্গলকে কেন আমরা সম্পদ বলবো?
11) পশ্চিমবঙ্গের কোথায় কোথায় কয়লা পাওয়া যায়?
12) ইট ভাটার ইট পোড়ানোর জন্য আমরা কোন সম্পদ ব্যবহার করি?
13) প্রাকৃতিক সম্পদ কাকে বলে?
14) কয়লা সম্পদের চারটি ব্যবহার লেখ?
15) ধান চাষ করতে গেলে কিরকম জমির প্রয়োজন?
16) কয়লা ছাড়া পশ্চিমবঙ্গে আর কি কি সম্পদ পাওয়া যায়)
17) কয়লা উত্তোলনের পশ্চিমবঙ্গের স্থান কত?
18) তোমার বাড়ির আশেপাশে কোন সম্পদ পাওয়া গেলে তার নাম লেখ।
19) সূর্য কিরণ একটি কি সম্পদ?
20) কয়লা কি ধরনের সম্পদ?


Tuesday, May 12, 2020

প্রজাতন্ত্র দিবস ও আমরা

প্রজাতন্ত্র দিবস ও আমরা
রাজেশ চ্যাটার্জী


(এই লেখাটির উপরের অংশ আমার সম্মানীয় শিক্ষক ও শিক্ষিকারা সবাই জানেন মাঝের অংশ থেকে পড়লে আপনি সমৃদ্ধ হবেন এই এই ধারনা আমার ভুলও হতে পারে।)

আজ ২৬ শে জানুয়ারি ২০২০ সাল। এটি ভারতের ৭১তম প্রজাতন্ত্র দিবস বা রিপাবলিক ডে ।
ভারতের তিনটি জাতীয় দিবসের মধ্যে একটি হল প্রজাতন্ত্র দিবস এবং এই সঙ্গে জেনে নেওয়া দরকার অন্যান্য জাতীয় দিবস গুলি হল স্বাধীনতা দিবস এবং গান্ধী জয়ন্তী।

আমরা জানি ১৫ই আগস্ট ১৯৪৭ এ ভারত স্বাধীন হল। কিন্তু দেশের প্রধান হিসেবে তখনও রয়ে গিয়েছিলেন ষষ্ঠ জর্জ এবং লর্ড লুই মাউন্টব্যাটেন ছিলেন এর গভর্ণর জেনারেল। তখনও দেশে কোনো স্থায়ী সংবিধান তৈরি করা যায় নি ; ঔপনিবেশিক ভারত শাসন আইনে সামান্য পরিবর্তন ঘটিয়েই জোড়াতালি দিয়ে দেশ শাসনের কাজ কোনমতে চলছিল। তাই দেশ শাসনে পরিপূর্ণতা আসছিল না কারণ ভারতের বিভিন্নতা, বহু ভাষা, ধর্ম, জাতি ও সংস্কৃতির দেশ। এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ এবং ভারতের একটি নিজস্বতা আনার জন্য ১৯৪৭ খ্রিঃ ২৮শে আগস্ট একটি স্থায়ী সংবিধান রচনার জন্য ড্রাফটিং কমিটি গঠন করা হয় ভীমরাও রামজি আম্বেডকরের নেতৃত্বে । ড.আম্বেডকর ছাড়াও এই কমিটিতে আরও ছয় জন সদস্য সহ ৩০৮ ছিলেন। 
এই কমিটি একটি খসড়া সংবিধান প্রস্তুত করে গণপরিষদে জমা দেয় তারিখ টা ছিল ৪ঠা নভেম্বর ১৯৪৭ । গণপরিষদে সংবিধান গৃহীত হওয়ার আগে ২ বছর, ১১ মাস, ১৮ দিন ব্যাপী সময়ে গণপরিষদ এই খসড়া সংবিধান আলোচনার জন্য ১৬৬ বার অধিবেশন ডাকা হয় । এই সমস্ত অধিবেশনে জনসাধারণের প্রবেশের কোন বাধা ছিল না । বহু বিতর্ক ও কিছু সংশোধনের পর ২৪ শে জানুয়ারি ১৯৫০ এ গণপরিষদের ৩০৮ জন চূড়ান্ত সংবিধানের হাতে-লেখা একটি ইংরেজি ও অপরটি হিন্দি নথিতে স্বাক্ষর করেন। এর দু'দিন পর সারা দেশব্যাপী ভারতের নিজস্ব এই সংবিধান কার্যকর হয়। যদিও এই সংবিধানে বৃটেন এবং আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের যথেষ্ঠ ছায়া পাওয়া যায় তবুও এই সংবিধান আমাদের তথা ভারতের একান্ত নিজস্ব সংবিধান।
এই দুটি দেশ ছাড়া আর যে সব দেশের অনুপ্রেরণা পাওয়া যায় আমাদের এই সংবিধানে সেই দেশগুলি হল আয়ারল্যান্ড ,অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ,ফ্রান্স ও সোভিয়েত ইউনিয়ন।আর জার্মানি থেকে পাওয়া গিয়েছে ৩৫৬ ধারার অনুপ্রেরণা।
এখন প্রশ্ন হল ২৬শে জানুয়ারি কেন প্রজাতন্ত্র দিবস পালন করা হয়?
এর কারণটি হল-
১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি ভারতীয় গণপরিষদ সংবিধান কার্যকরী হলে ভারত একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত হয়।
কিন্তু ১৯৪৯ সালে ২৬ নভেম্বর গণপরিষদ কর্তৃক ভারতের সংবিধান অনুমোদিত হয়। ২৬ জানুয়ারি দিনটিকে সংবিধান কার্যকর করার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল কারণ ১৯৩০ সালে ঐ একই দিনে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস কর্তৃক পূর্ণ স্বরাজের সংকল্প ঘোষিত ও গৃহীত হয়েছিল।এই গুরুত্বের জন্য ২৬শে জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবস
 অপরদিকে ২৬ শে নভেম্বর পালন করা হয় সংবিধান দিবস হিসাবে।

এবার আসা যাক সংবিধানের প্রস্তাবনাটি সম্পর্কে ।
সংবিধানের প্রস্তাবনাটি ছিল এই রূপ-
“  আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম , গণতান্ত্রিক ,সাধারণতন্ত্ররূপে গড়িয়া তুলিতে এবং উহার সকল নাগরিক যাহাতে:
সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক ন্যায়বিচার ;

চিন্তার, অভিব্যক্তির, বিশ্বাসের, ধর্মের ও উপাসনার স্বাধীনতা ;

প্রতিষ্ঠা ও সুযোগের সমতা

নিশ্চিতভাবে লাভ করেন;

এবং তাঁহাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-মর্যাদা ও জাতীয় ঐক্য ও সংহতির আশ্বাসক বর্ধিত হয়।

তজ্জন্য সত্যনিষ্ঠার সহিত সংকল্প করিয়া আমাদের সংবিধান সভায় অদ্য, ২৬ নভেম্বর, ১৯৪৯ তারিখে, এতদ্দ্বারা
এই সংবিধান গ্রহণ, বিধিবদ্ধ এবং আমাদিগকে অর্পণ করিতেছি।”
পরবর্তীকালে ১৯৭৬ সালের সংবিধানের প্রস্তাবনাটি ৪২ তম সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে আবার পরিবর্তন করা হয় এবং এর সঙ্গে যুক্ত করা হয় সমাজতান্ত্রিক,ধর্মনিরপেক্ষ ও ভ্রাতৃভাব এই কথাটি।

সাধারণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে জাতীয় রাজধানী নতুন দিল্লীতে কুচকাওয়াজ হয় রাষ্ট্রপতির আবাসস্থল রাষ্ট্রপতি ভবনের নিকটবর্তী রাইসিনা হিল থেকে রাজপথ বরাবর ইন্ডিয়া গেট ছাড়িয়ে। কুচকাওয়াজ আরম্ভ হওয়ার পূর্বে রাষ্ট্রপতি রাজপথের একপ্রান্তে অবস্থিত  ইন্ডিয়া গেটে শহিদ সৈন্যদের উদ্দেশ্যে নির্মিত স্মারক অমর জওয়ান জ্যোতি-তে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।


প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রধান অতিথি ভারতের রাষ্ট্রপতি হলেও প্রতিবছর এক বা একের বেশি অতিথি রাষ্ট্রকে আমন্ত্রণ করা হয়।
অতিথি রাষ্ট্র কে হবে তা নির্ধারিত হয় কৌশলগত, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক গুরুত্ব বিবেচনা করে।
ভুটান ও ফ্রান্স সবচেয়ে বেশি বার (চার বার) আমন্ত্রিত হয়েছে, আর তাদের পরেই আছে মরিশাস , সোভিয়েত ইউনিয়ন বা বর্তমান রাশিয়া এবং ব্রাজিল: শেষোক্ত তিন দেশই আমন্ত্রিত হয়েছে তিন বার করে।
১৯৫০ সালের প্রজাতন্ত্র দিবসে প্রথম ও প্রধান অতিথি ছিলেন ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি সুকণ্য এবং 2000 সালে ৫০তম বর্ষে প্রধান অতিথি ছিলেন নাইজেরিয়ার রাষ্ট্রপতি ওলুসেগুন ওবাসাঞ্জো ।
এমনকি ২০১৫ সালের প্রজাতন্ত্র দিবসে আমেরিকার রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামা ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসে অনুষ্ঠানে এসেছিলেন।
 এছাড়া ২০১৮ সালের প্রজাতন্ত্র দিবসে সবথেকে বেশি রাষ্ট্রপ্রধানরা এসেছিলেন ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসে এখানে আশিয়ান দেশগুলির অন্তর্গত রাষ্ট্রপ্রধানরা ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসে এসেছিলেন।
২০২০ সালের প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রধান অতিথি হয়ে এসেছেন ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতি জাহির বল সোনারো।
এই প্রসঙ্গে বলে রাখা ভালো মোট তিনবার প্রজাতন্ত্র দিবসে কোন রাষ্ট্রপ্রধান কে আমন্ত্রণ করা হয়নি । সাল গুলি হল ১৯৫২, ১৯৫3 এবং ১৯৬৬ ।

এবার আমরা জানবো প্রজাতন্ত্র দিবসে কি কি অনুষ্ঠান পালিত হয়।
প্রজাতন্ত্র দিবসে অনুষ্ঠান সূচনা হয় জাতীয় সংগীত দিয়ে এবং এর সমাপ্তি ঘটে সারে জাহা সে আচ্ছা এই গানটির মাধ্যমে।
প্রজাতন্ত্র দিবসে তিন বাহিনী যথা নৌবাহিনী , বায়ুবাহিনী ও স্থলবাহিনী প্রধানরা উপস্থিত থাকেন এবং এই তিন বাহিনীর সৈনিকরা তাদের বিভিন্ন কার্যকলাপ প্রদর্শন করেন। 
এছাড়া ভারতের প্রায় সমস্ত রাজ্য এই প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে তাদের ট্যাবলো সহ অংশগ্রহণ করেন।
সেনাবাহিনীর বীর সৈনিকদের উৎকর্ষতা বিচার করার জন্য এই দিনে পরমবীর চক্র প্রদান করা হয়।
এই দিনে  সন্ধ্যায় বিশেষ অনুষ্ঠানে পদ্মশ্রী পদ্মবিভূষণ ও পদ্মভূষণ পুরস্কার দেয়া হয় সাহিত্য চিকিৎসক অভিনেত্রী নাট্যকর্মী রাজনীতিবিদ বিজ্ঞানী এবং খেলার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিবর্গকে।

এবার আমরা জানবো ২৬ শে জানুয়ারির কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-
 আমরা সবাই জানি প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান রাজপথে হয় কিন্তু ১৯৫০ থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত এই অনুষ্ঠানটা রাজপথে হতো না। অনুষ্ঠান চলত অরবিন্দ স্টেডিয়ামে যেটা বর্তমান ন্যাশনাল স্টেডিয়াম নামে পরিচিত এছাড়া কিংস্ওয়ে, লালকেল্লা, রামলীলা ময়দানে অনুষ্ঠিত হতো। ১৯৫৫সাল থেকেই রাজপথেই এই প্যারেড অনুষ্ঠান হয় ওই সময় ওই রাস্তাটি কে বলা হতো কিংস্ ওয়ে ।
২৬ শে জানুয়ারির এই অনুষ্ঠানটি রাষ্ট্রপতির আগমনের সঙ্গে সঙ্গে শুরু হতে থাকে রাষ্ট্রপতির  ঘোড়সাওয়ার ও দেহরক্ষীদের দ্বারা জাতীয় পতাকার সম্মান দেয়া হয়। ওই সময় জাতীয় সংগীত বাজানো হয় এবং ২১ টা বন্দুকের গোলা ছোড়া হয়।

প্রজাতন্ত্র দিবস অনুষ্ঠান আসলে তিন দিনের দীর্ঘ অনুষ্ঠান যেটি শেষ হয় ২৯ শে জানুয়ারি বীটিং রিট্রীট অনুষ্ঠানের মাধ্যমে।ভারতের সামরিক বাহিনীর তিন প্রধান শাখা ভারতীয় স্থলসেনা, ভারতীয় নৌবাহিনী এবং ভারতীয় বায়ুসেনা এই রিট্রীটে অংশ নেয়। রাজপথের প্রান্তে ভারতের কেন্দ্রীয় সচিবালয় ও রাষ্ট্রপতি ভবনের নর্থ ব্লক ও সাউথ ব্লক ভবন দু'টির মধ্যবর্তী রাইসিনা হিল ও বিজয় চকে এই অনুষ্ঠানটি হয়।
 প্যারেডে যোগদানকারী প্রতিটা দল রাত্রি দুটো থেকেই তৈরি হয়ে যান এবং ভোর তিনটের সময় তারা রাজপথে চলে আসেন। কিন্তু এই প‍্যারাডে অনুশীলন আগের বছর জুলাই থেকেই শুরু হয়ে যায় এবং আগস্ট মাস পর্যন্ত তারা তাদের নিজস্ব কেন্দ্রে এই অনুশীলন সম্পন্ন করেন। ডিসেম্বর মাসে এরা সবাই দিল্লিতে চলে আসেন। কিন্তু ২৬ শে জানুয়ারি এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার আগে তারা মোট ৬০০ ঘন্টা কঠিন অনুশীলন করেন।

প্যারেডে অংশগ্রহণকারী প্রতিটি গাড়ি ,যন্ত্র এবং অস্ত্রশস্ত্র অন্তত দশবার করে পরীক্ষা করা হয় ।যাতে ক্ষতিকর কোনো অস্ত্র বা গোলা না থাকে।

 ২৬শে জানুয়ারি অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য প্রতিটি দলের যে অনুশীলন হয় সেই অনুশীলনের সময় প্রত্যেকটা দল অন্তত ১২ কিলোমিটার দূরত্ব বজায় রাখে এবং ২৬ শে জানুয়ারি দূরত্ব কমে হয় ৯ ঘণ্টা এবং এদের যাত্রার গতিবেগ থাকে ঘন্টায় পাঁচ ঘন্টা ,যাতে সমস্ত দর্শনার্থীরা এই অনুষ্ঠান ভালো ভাবে উপভোগ করতে পারে ।

সমস্ত প্যারেডের যাত্রাপথে বিভিন্ন বিচারক মন্ডলী বসে থাকেন তারা ২০০ নম্বরের মধ্যে প্রত্যেক দলকে নম্বর দেন এবং সবশেষে সেরা দল কে পুরস্কৃত করা হয়।
প্যারেডের সবথেকে দৃষ্টিনন্দন অনুষ্ঠানটি হল বায়ুসেনা দ্বারা বিভিন্ন জেট প্লেনের উড়ান পদ্ধতি এবং এটির দায়িত্ব থাকেন পশ্চিমী বায়ুসেনার কমান্ডের কাছে। এখানে মোট ৪১ টি বিমান যোগদান করে।
 প্রত্যেক প্রজাতন্ত্র দিবসে  নিশ্চিত ভাবে Abide with me গানটি গাওয়া হয় কারণ এটি মহাত্মা গান্ধীর খুবই পছন্দের গান ছিল।
 প্যারেডের যোগদানকারী সৈনিকরা ভারতে তৈরি ইনসাস রাইফেল ব্যবহার করেন।
 আবার বিশেষ সুরক্ষা জওয়ানরা ইসরাইলের তৈরি টেগোর রাইফেল ব্যবহার করেন।

এই হল ২৬ শে জানুয়ারি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আমার একটি লেখা। তবে ঠিক লেখা নয় তথ্য জোগাড় করা ।
প্রতিবছর ২৬ শে জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবস পালন করলেও এর মূল ভাবনা গুলি আমরা কখনো মনে রাখি না অথবা মনে থাকলেও এর প্রয়োগ গুলো আমরা সঠিক ভাবে করি না অথবা আমরা নিজেরা নিজেদের দায়িত্ব পালন করি না। যা লেখা থাকে বছরের পর বছর ধরে সংবিধানের পাতায় এবং আমাদের বইয়ের পাতায় অথবা বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গের বক্তব্যের মাঝে এবং আমাদের মনে বাস্তবে এর প্রয়োগ খুবই কম।

 উপরে যা আমি লিখেছি তা ইন্টারনেট ও বিভিন্ন বই থেকে সংগ্রহ করা তথ্যাবলী থেকে সংগ্রহীত । এই তথ্যাবলীগুলি যদি কোন ভুল থাকে আমাকে মার্জনা করবেন। এবং কমেন্টসের মাধ্যমে সঠিকটা লিখবেন আমি সংশোধন করার চেষ্টা করবো। কাউকে বিভ্রান্ত করা অথবা ভুল তথ্য পরিবেশন করা আমার উদ্দেশ্য নয়।
সবাই ভাল থাকবেন এবং অন্যকে ভাল রাখবেন ।
জয় হিন্দ । বন্দেমাতারাম ।

শিক্ষক দিবস

শিক্ষক দিবস Teacher's Day আজকে শিক্ষক দিবস। আজকেই আমাদের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণানের জন্মদিন। রাষ্ট্রপতি হলেও তিনি একজন ...